স্টাফ রিপোর্টার : নওগাঁর মান্দায় ববিতা খানম এক গৃহবধূকে যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগ উঠে গত বুধবার। ঘটনাটি বুধবারের হলেও নির্যাতনের সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে (ভাইরাল) পরই বিষয়টি জানাজানি হয়। এ ঘটনায় রবিবার ভোরে ওই গৃহবধূর শ্বশুর ও শাশুড়ীকে আটক করেছে থানা পুলিশ। আটককৃতরা হলো, উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়নের গনেশপুর দালালপাড়া গ্রামের সামির উদ্দিন মোল্লা (৬৫) ও তাঁর স্ত্রী হাজেরা বিবি (৬১)। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন গৃহবধূ ববিতা খানমের স্বামী জাহিদ হোসেন মোল্লা (৩২)। নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ ববিতাকে রবিবার ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ, তাঁর স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, ৭ মাস আগে নওগাঁ সদর উপজেলা তেলিপুকুর হঠাৎপাড়া গ্রামের মর্জিনা বিবির মেয়ে ববিতা খানমের সঙ্গে মান্দা উপজেলার গনেশপুর দালালপাড়া গ্রামের সামির উদ্দিন মোল্লার ছেলে জাহিদ হোসেন মোল্লার বিয়ে হয়। ববিতা জাহিদ হোসেনের তৃতীয় স্ত্রী। জাহিদ বিভিন্ন হাট-বাজারে ছাগলের ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ আগের দুই স্ত্রীও জাহিদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে তালাক নিয়ে চলে যান। ববিতার সঙ্গে বিয়ের সময় তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুকও নেন জাহিদ হোসেন। এরপরেও ববিতার কাছে আরও যৌতুক দাবি করেন। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিসহ বিভিন্ন বাহানায় ববিতাকে নির্যাতন করে আসছেন বলেও তাঁদের অভিযোগ।
গৃহবধূর মা মর্জিনা বিবি জানান, বিষয়টি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে একাধিকবার সালিসও হয়েছে। এরপরেও ববিতার ওপর নির্যাতন থামেনি। গত বুধবার দুপুরে তাঁকে মারধর শুরু করেন জাহিদ। মুঠোফোনে কেউ একজন নির্যাতনের ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন। পরে সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। এরপরই বিষয়টি জানাজানি হয়।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান জানান, ‘নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর ওই গৃহবধূ থানায় অভিযোগ করতে আসেনি। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখে থানা পুলিশ তাঁকে খুঁজে বের করেন। পরে ওই গৃহবধূ শ্বশুর-শাশুড়ীকে আটক করা হয়েছে। ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’